ওজন ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার সহজ কয়েকটি টিপস | ডা আবিদা সুলতানা
গত কয়েক বছরে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান বলছে, সামনের কয়েক বছরে এই সংখ্যা আরো অনেক গুণ বাড়তে পারে। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, এই বৃদ্ধির পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ অনিয়মিত জীবনযাপন, ওজন বৃদ্ধি ও মানসিক চাপ। তবে আশার কথা হলো—কিছু সহজ অভ্যাস মেনে চললেই এই পরিস্থিতি থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকা সম্ভব।
চলুন, জেনে নিই টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার কয়েকটি উপায়।
সত্যিকারের ক্ষুধা পেলে তবেই খান
অনেকেই না বুঝেই খেতে শুরু করেন—মানসিক চাপ, একঘেয়েমি বা কাউকে সঙ্গ দিতে গিয়ে। খাবার গ্রহণের আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনার কি সত্যিই ক্ষুধা পেয়েছেন? যদি না হয়ে থাকে, তাহলে অযথা খাওয়ার দরকার নেই—এমনকি যদি সেটা প্রিয় খাবার হয়। এমন অভ্যাস আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন
মদ খেলে শরীরে ‘ঘ্রেলিন’ নামক হরমোনের মাত্রা বাড়ে, যা ক্ষুধা বাড়ায়। এতে মানুষ নিজের আচরণ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না এবং প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি খেয়ে ফেলে। ফলে ওজন বাড়ে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
খাবার খাওয়ার আগে ক্যালরি সম্পর্কে সচেতন হোন
যে খাবার আপনি খাচ্ছেন, তা কত ক্যালরির—জেনে নিন। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করুন আপনার দৈনন্দিন এক্সারসাইজ বা শারীরিক পরিশ্রম। যেমন ধরুন, ২৫০ ক্যালরির চকোলেট খেলে আপনাকে অন্তত ৪২ বার সিঁড়ি ভাঙতে হবে সেটি খরচ করতে। সচেতনতা আপনাকে অতিরিক্ত ওজন থেকে রক্ষা করবে।
খাওয়ার আগে পানি পান করুন
প্রতিবার খাওয়ার আগে এক-দুই গ্লাস পানি পান করলে পেট কিছুটা ভরে যায় এবং আপনি কম খাওয়ার প্রবণতায় থাকেন। পানি শরীর ডিটক্স করে এবং বিপাকক্রিয়া (মেটাবলিজম) বাড়ায়, ফলে বাড়তি ক্যালরি ক্ষয় করে। এছাড়াও এটি ত্বক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
জাঙ্কফুড এড়িয়ে চলুন
প্রসেসড খাবারে থাকা রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট ও ফাঁকা ক্যালোরি শরীরের ক্ষতি করে। এই ধরনের খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। কিছু খেলেই বসে থাকবেন না—না হলে সেই ক্যালরি আর খরচ হবে না। বরং হালকা হাঁটা বা স্ট্রেচিং করুন।
মেজাজ ঠিক রাখুন, মন ভালো রাখুন
খারাপ মুড বা মানসিক অবসাদের সময় অনেকে বেশি খেয়ে ফেলেন, বিশেষ করে হাই-কার্ব খাবার। এর ফলেই ওজন বাড়ে ও ডায়াবেটিসের আশঙ্কা তৈরি হয়। মুড খারাপ থাকলে স্বাস্থ্যকর কোনো বিকল্প—যেমন ফল, বাদাম বা দই খাওয়ার চেষ্টা করুন।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
স্ট্রেস হরমোন ‘কর্টিসল’ শরীরের বিপাকক্রিয়া ধীর করে এবং লবণ ও প্রোটিন জাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়িয়ে দেয়। এতে অনিয়ন্ত্রিত খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। প্রতিদিন কিছু সময় মেডিটেশন বা হাঁটার অভ্যাস রাখুন।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি যতই বাড়ুক না কেন, আপনার দৈনন্দিন অভ্যাসেই লুকিয়ে আছে সমাধান। খাবার, ঘুম, স্ট্রেস ও চলাফেরার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখলেই নিজেকে অনেকটা নিরাপদে রাখা সম্ভব। আজ থেকেই এই অভ্যাসগুলো গড়ে তুলুন, ডায়াবেটিসকে বলুন না।
ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health
- ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।
Follow Me -
Facebook : Dr. Abida Sultana
Youtube : Dr. Abida Sultana
tiktik : Dr. Abida Sultana


No comments