Header Ads

কিডনি রোগ প্রতিরোধে যা যা করণীয় | ডা আবিদা সুলতানা

কিডনি রোগ প্রতিরোধে যা যা করণীয়, আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস


কিডনি মানব শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা রক্ত পরিশোধন করে, অতিরিক্ত পানি ও বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে বের করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিভিন্ন কারণে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যার ফলে কিডনি রোগ দেখা দিতে পারে। তাই কিডনি রোগ প্রতিরোধে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস কিডনির সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।

রঙিন ফল ও সবজি খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত, কারণ এতে থাকে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা কিডনিকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। তবে কিডনি রোগীদের পটাশিয়াম ও ফসফরাসযুক্ত খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলা জরুরি। লবণের অতিরিক্ত ব্যবহার কিডনির ক্ষতির কারণ হতে পারে, তাই লবণযুক্ত খাবার সীমিত করা উচিত। পানি পান নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পরিমাণে করতে হবে; সাধারণত দিনে আট গ্লাস পানি পান করা স্বাভাবিক, তবে কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের নির্দেশিকা অনুসরণ জরুরি।

শারীরিক ব্যায়ামও কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। হাঁটা, দৌড়ানো কিংবা সাঁতারের মাধ্যমে শরীর চাঙ্গা রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাও কিডনি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। ধূমপান ও মদ্যপান কিডনির জন্য ক্ষতিকর, তাই এগুলো থেকে বিরত থাকা উচিত।

চিকিৎসাসংক্রান্ত যেকোনো ওষুধ অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করতে হবে, কারণ কিছু ওষুধ কিডনিকে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ থাকলে নিয়মিত চেকআপ করানো প্রয়োজন।

কিডনি রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণত কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তবে রোগটি যখন বাড়তে থাকে, তখন প্রস্রাবের পরিমাণ পরিবর্তন হতে পারে; তা বাড়তে বা কমতে পারে, কখনো কখনো প্রস্রাবের মধ্যে রক্ত দেখা যায় বা রং পরিবর্তিত হয়। এ ছাড়া প্রস্রাবের ফেনাও বেড়ে যেতে পারে।


শরীরের বিভিন্ন অংশ যেমন চোখ, পা, হাত বা পেটে ফোলা দেখা দেয়। রোগী সারা দিন ক্লান্তি অনুভব করতে পারে এবং খিদে কমে যেতে পারে, যার ফলে ওজন কমে। মুখে অদ্ভুত ধাতব স্বাদ অনুভূত হতে পারে, চুল পড়া বাড়তে পারে, ত্বক ফ্যাকাশে ও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে এবং চুলকানি দেখা দিতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট হতে পারে, যা ফুসফুসে তরল জমার কারণে হয়। উচ্চ রক্তচাপের জন্য মাথা ব্যথাও হতে পারে। রোগীর মনোযোগ কমে যেতে পারে এবং স্মৃতিশক্তি দুর্বল হতে পারে।

কিডনি রোগের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ কিডনিকে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ ছাড়া কিডনির সংক্রমণ, পলিসিস্টিক কিডনি রোগ, কিডনিতে পাথর, অটোইমিউন রোগ বা কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কিডনি রোগের কারণ হতে পারে। রোগের ধরন ও তীব্রতার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা নির্ধারণ করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তবে অনেক সময় ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপন (ট্রান্সপ্লান্ট) প্রয়োজন হতে পারে।


ডায়ালাইসিস এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে মেশিনের সাহায্যে রক্ত পরিশোধন করা হয়। যখন কিডনি তার কাজ করতে পারে না, তখন এই পদ্ধতি বর্জ্য পদার্থ, অতিরিক্ত পানি ও লবণ শরীর থেকে বের করে দেয়। হেমোডায়ালাইসিস ও পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস হলো এর প্রধান দুই ধরণ। হেমোডায়ালাইসিসে রক্তকে মেশিনের মাধ্যমে ফিল্টার করা হয়, আর পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিসে পেটের ভেতর তরল প্রবেশ করিয়ে তা বর্জ্য পদার্থ শোষণ করে বের করা হয়। এ ছাড়া কিডনি রোগের চিকিৎসায় কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত। এটি রোগীর ক্ষতিগ্রস্ত কিডনির পরিবর্তে সুস্থ কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়, যা মৃত বা জীবিত দাতার হতে পারে। আধুনিক চিকিৎসায় দৈনিক ডায়ালাইসিস, স্বয়ংক্রিয় পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস এবং নতুন ধরনের ওষুধের উন্নয়ন ঘটছে, যা রোগের অগ্রগতি ধীর করতে ও রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করে। বর্তমানে জিন থেরাপির মাধ্যমে কিডনি রোগের চিকিৎসায় গবেষণাও চলছে, যা ভবিষ্যতে আরো উন্নত চিকিৎসার পথ সুগম করবে।


কিডনি রোগের ক্ষেত্রে শারীরিক ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাঁটা, সাইক্লিং, যোগাসন ও তাইচির মতো ব্যায়াম শরীর ও মনের জন্য উপকারী। এছাড়া হালকা ওজন উত্তোলন বা ব্যান্ড ব্যবহার করে শক্তি প্রশিক্ষণও করা যেতে পারে, তবে সবসময় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়াম করতে হবে।


কিডনি রোগ ও গর্ভাবস্থার মধ্যে একটি জটিল সম্পর্ক রয়েছে। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের শরীরে রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যার ফলে কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। গর্ভাবস্থায় নতুন ধরনের কিডনি সমস্যা যেমন প্রেগন্যান্সি-ইন্ডুসড হাইপারটেনশন দেখা দিতে পারে, যা কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। গর্ভাবস্থায় অনেক ওষুধ গ্রহণ নিরাপদ নয়, তাই কিডনি রোগী গর্ভবতী হলে বিশেষ সতর্কতা ও যত্ন প্রয়োজন। কিডনি রোগ থাকা অবস্থায় গর্ভধারণের আগে অবশ্যই নেফ্রোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চেকআপ, সুষম খাদ্যগ্রহণ, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন অত্যন্ত জরুরি।


গর্ভাবস্থায় কিডনি রোগের লক্ষণ হিসেবে পা, হাত, মুখ ফুলে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, ক্লান্তি ও বমিভাব দেখা দিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health

ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।


Follow Me -

Facebook : Dr. Abida Sultana 

Youtube : Dr. Abida Sultana 

X : Dr. Abida Sultana 

tiktik : Dr. Abida Sultana 

No comments

Powered by Blogger.