Header Ads

অগ্নিদগ্ধ রোগীর চিকিৎসায় প্রথম ২৪ ঘণ্টা কেন ‘গোল্ডেন আওয়ার’ | ডা আবিদা সুলতানা | Why the first 24 hours are the 'golden hour' in treating burn patients | Dr. Abida Sultana

অগ্নিদগ্ধ রোগীর চিকিৎসায় প্রথম ২৪ ঘণ্টা কেন ‘গোল্ডেন আওয়ার’ | ডা আবিদা সুলতানা | Why the first 24 hours are the 'golden hour' in treating burn patient

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার ইতোমধ্যে ২৪ ঘণ্টা পার হয়েছে।

অগ্নিদগ্ধ শিশু ও অন্যদের অনেকে এখনো জীবনের জন্য লড়ছেন হাসপাতালে। তবে আহতদের চিকিৎসায় গত ২৪ ঘণ্টা ছিল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কেন?

ত্বক আমাদের শরীরের একটি সুরক্ষা ঢাল। এটি পুড়ে গেলে শরীর দ্রুত তরল হারায়, শরীরে জীবাণু ঢোকার রাস্তা খুলে যায়, সেই সঙ্গে ব্যথা ও সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেক গুণ।

আগুন, গরম পানি, বিদ্যুৎ বা কোনো রাসায়নিক– এগুলো সংস্পর্শে দেহের ত্বক এবং ত্বকের নিচের টিস্যু পুড়ে গেলে সেই অগ্নিদগ্ধ রোগীর জন্য প্রথম ৬০ মিনিট ও তারপর ২৪ ঘণ্টাকে বিষেশজ্ঞরা ‘গোল্ডেন আওয়ার’ বলেন। এই গোল্ডেন আওয়ার আসলে কী?

গোল্ডেন আওয়ার বলতে প্রাথমিক পর্যায়ে বোঝায় দুর্ঘটনার পরের প্রথম এক ঘণ্টা, এই সময়টা জীবন বাঁচানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, এই সময়ের মধ্যে যদি অগ্নিদগ্ধ রোগী সঠিক চিকিৎসা পায়, তাহলে মারাত্মক জটিলতা বা মৃত্যুঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।

কারণ অগ্নিদগ্ধের জটিলতা কয়েক মিনিটের ব্যবধানে বেড়ে যেতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগীদের ৫০ শতাংশের মৃত্যু হয় দেরিতে চিকিৎসা শুরু হওয়ায়। সঠিক সময়ে শরীরে তরলের অভাব পূরণ করা, ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা, অক্সিজেন দেওয়া ও সংক্রমণ প্রতিরোধ করলে জীবন বাঁচানো সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বার্ন গাইডলাইনস্ ও ডাব্লিউওএস-ইএমআর মেডিকেল জার্নাল অনুযায়ী, গোল্ডেন আওয়ারে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করলে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।

গোল্ডেন আওয়ারে দ্রুত চিকিৎসা না পেলে যেসব সমস্যা হতে পারে

১. তরল ও রক্তের ঘাটতি: ত্বক পুড়ে গেলে শরীরের ভেতরের তরল (পানি ও লবণ) দ্রুত কমে যেতে থাকে। এতে রক্তচাপ কমে যায়, কিডনি কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে।

২. সংক্রমণ বা ইনফেকশন: পোড়া স্থানে জীবাণু ঢুকে রক্তে ছড়িয়ে পড়লে সেপ্টিসেমিয়া বা ভয়াবহ সংক্রমণ হতে পারে। দগ্ধ শরীরে এমন ইনফেকশন থেকে ফিরে আসা প্রচণ্ড কঠিন।

৩. শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা: ধোঁয়া বা গ্যাস শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকলে শ্বাসকষ্ট, শ্বাসনালী পুড়ে যাওয়া কিংবা ফুসফুসের সংক্রমণ হতে পারে। দ্রুত সনাক্ত না হলে এর ফলে মৃত্যু ঘটতে পারে।

৪. দাগ ও অঙ্গহানি: পোড়া অংশের চিকিৎসা দেরি হলে স্থায়ী দাগ বা অঙ্গ বিকল হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

৫. মানসিক আঘাত: পোড়া ক্ষত ও ব্যথা রোগীর মনে ভয়, আতঙ্ক ও মানসিক চাপ তৈরি করে, যা দীর্ঘমেয়াদে মানসিক অসুস্থতার দিকে ঠেলে দিতে পারে।

গোল্ডেন আওয়ারে প্রাথমিক করণীয়

>> পোড়া জায়গায় সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে। তবে বরফ দেওয়া যাবে না।

>> পোড়া স্থানে কোনো ঘরোয়া ওষুধ লাগাবেন না। অনেকে কোথাও পুড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টুথপেস্ট বা ডিম লাগান, এটি করবেন না।

>> পানি ঢেলে পোড়া স্থান পরিষ্কার ও পাতলা কাপড়ে ঢেকে দিন।

>> পোড়া স্থান ঢেকে রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব বার্ন ইউনিট বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

গবেষণা যা বলে

২০২০ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অগ্নিদুর্ঘটনার পর প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যে গুরুতর আহত রোগীর দ্রুত চিকিৎসা না হলে মৃত্যু হার প্রায় ৩২ শতাংশ। সেই তুলনায় সময়মতো চিকিৎসা পেলে, মৃত্যুহার কমে আসতে পারে মাত্র ৭ শতাংশে।

আগুনে পোড়ার মতো দুর্ঘটনা যে কোনো সময়, যে কোনো মানুষের সঙ্গে ঘটতে পারে। তাই গোল্ডেন আওয়ারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে দুর্ঘটনায় করণীয় সম্পর্কে জ্ঞান রাখা উচিত সবার। শুধু সময় নষ্ট না করে দ্রুত পদক্ষেপ নিলেই অনেক অগ্নিদগ্ধ রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব।


অগ্নিদগ্ধ রোগীর চিকিৎসায় প্রথম ২৪ ঘণ্টা কেন ‘গোল্ডেন আওয়ার’ | ডা আবিদা সুলতানা

Why the first 24 hours are the 'golden hour' in treating burn patients | Dr. Abida Sultana


ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health

ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।


Follow Me -

Facebook : Dr. Abida Sultana 

Youtube : Dr. Abida Sultana 

X : Dr. Abida Sultana 

tiktik : Dr. Abida Sultana 

No comments

Powered by Blogger.